BANNER

কীভাবে বাড়বে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা।

লেখা:অধ্যাপক ডা. এস এম সামসুজ্জামান, বিভাগীয় প্রধান, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ

সংগৃহিতঃ প্রথম আলো  : ১৫ জুন ২০২৩ 

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বা ইমিউনিটি সবার সমান নয়। শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা স্বাভাবিকভাবেই কম থাকে। অন্তঃসত্ত্বা নারীদেরও কম থাকে। যাঁদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ক্যানসার আছে এবং যাঁরা স্টেরয়েড সেবন করেন, তাঁদেরও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়। কিন্তু একই বয়সের আপাতদৃষ্টে সুস্থ-সবল মানুষও সহজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন, নানা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হন। কেন? আসলে রোগপ্রতিরোধের সঙ্গে জীবনধারার কিছু দিক সরাসরিই সম্পর্কিত। জেনে নিন কীভাবে আপনি নিজের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে পারেন।

খাদ্যাভ্যাস

প্রতিদিন পর্যাপ্ত আমিষ খেতে হবে। মাছ, মাংস, দুধ, ডিম আমিষের ভালো উৎস। আমিষ গঠিত হয় অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়ে। খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের ডাল, বীজ, বাদাম প্রভৃতির সংমিশ্রণ রাখলে সব মিলিয়ে প্রয়োজনীয় সব অ্যামাইনো অ্যাসিড পাওয়া সম্ভব।

কেবল ভিটামিন সি নয়, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ উপাদানও প্রয়োজন। তাই নানা ধরন ও রঙের ফলমূল, শাকসবজি খেতে হবে।

শিশু, কিশোর-কিশোরী, গর্ভবতী নারী, বয়স্ক ব্যক্তির খাদ্যাভ্যাসে বাড়তি খেয়াল রাখুন।

শরীরচর্চা ও বিশ্রাম

নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। ২০ থেকে ৩০ মিনিট করে, সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন। শারীরিক পরিশ্রম হয়, এমন খেলাধুলায় অংশ নিতে পারেন।

রাতের ঘুমটাও জরুরি। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির রাতে কমপক্ষে ৬ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। রাতের পর রাত নির্ঘুম থাকলে ইমিউনিটি কমে যায়।

ধূমপান ত্যাগ

ধূমপানের ফলে ফুসফুসের ভেতরের অংশ যেমন নষ্ট হয়, তেমনি শ্বাসতন্ত্রের সিলিয়াও নষ্ট হয়। সিলিয়া খুবই ছোট চুলের মতো, যা বাইরের ধুলাবালু, ময়লা ও রোগজীবাণু ঢুকতে বাধা দেয়। ধূমপায়ীর সিলিয়া নষ্ট হয় বলেই বারবার শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ হয়। নিজে ধূমপান না করলেও অন্যের সিগারেটের ধোঁয়ার ক্ষতিকর প্রভাবে সিলিয়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই যেসব শিশু পরোক্ষ ধূমপানের শিকার, তাদের ব্রঙ্কাইটিস ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি।


অতিরিক্ত ওষুধ সেবন নয়

পাকস্থলীর স্বাভাবিক অম্লত্ব থাকলে খাবারের সঙ্গে যাওয়া অনেক জীবাণু পাকস্থলীতেই ধ্বংস হয়ে যায়, কিন্তু অ্যাসিডিটি বা অম্লত্ব কমানোর ওষুধ দীর্ঘ মেয়াদে সেবন করলে এই স্বাভাবিক অম্লত্ব বজায় থাকে না। ফলে খাবারের সঙ্গে জীবাণু শরীরে ঢুকলে তাতে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, তাই প্রয়োজন ছাড়া দীর্ঘ মেয়াদে ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। বারবার অ্যাসিডিটি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। একইভাবে যাঁরা কারণে-অকারণে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন, তাঁরা নিজের অজান্তেই ধ্বংস করে ফেলেন উপকারী জীবাণুদের। এতে কমে যায় ইমিউনিটি।


No comments

Theme images by compassandcamera. Powered by Blogger.