BANNER

যে টিউমার গর্ভধারণের সময় বেশি ধরা পড়ে

লেখক:ডা. উম্মুল নুসরাত জাহান, কনসালট্যান্ট (গাইনি), বিআরবি হসপিটালস লি.

সংগৃহিতঃ প্রথম আলো: ১৫ জুন ২০২৩



ফাইব্রয়েড বা মায়োমা জরায়ুর একটি অতিপরিচিত টিউমার। ৩৫ বছরের বেশি বয়সী নারীদের প্রতি ১০০ জনে ৩৫ জনেরই এই টিউমার থাকতে পারে। মাসিকের সময় অধিক রক্তপাত ও ব্যথা এই টিউমারের লক্ষণ। যদিও প্রায় ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের লক্ষণ ছাড়াও থাকতে পারে এই টিউমার। অধিকাংশ সময় গর্ভাবস্থায় কিংবা অন্য কোনো কারণে পেটের  আলট্রাসাউন্ড করার সময় এটা ধরা পড়ে। 

অবস্থানভেদে এই টিউমার তিন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন সাব-সেরাস, ইন্ট্রা-মুরাল এবং সাব-মিউকাস। এর মধ্যে সাধারণত সাব-মিউকাস টিউমারই বেশি জটিলতার কারণ হয়ে থাকে। কারণ, এটি জরায়ুর ভেতরের দিকে অবস্থান করে।

গর্ভধারণের আগেই এই টিউমার ধরা পড়লে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। টিউমারটি যদি আকারে ছোট থাকে এবং সন্তান হওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে, তবে গর্ভধারণের চেষ্টা করে যেতে হবে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিউমার অপসারণ করার দরকার হবে। যেমন—

দীর্ঘদিন চেষ্টার পরও গর্ভধারণে ব্যর্থ হলে এবং বন্ধ্যত্বের অন্য কোনো কারণ পাওয়া না গেলে। 

তিন বা ততোধিকবার গর্ভপাত হলে।

বন্ধ্যত্ব সমস্যার জন্য টিউমার অপারেশন করার আগে কিছু শর্ত পূরণ করা জরুরি। 

বন্ধ্যত্বের অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা দেখে নিতে হবে। 

হিস্টারো স্যালফিংগোগ্রাম বা ল্যাপারোস্কপি করে ফেলোপিয়ান টিউব (ডিম্বনালি) খোলা কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে।

স্বামীর শুক্রাণু বা বীর্য স্বাভাবিক কি না, তা নিশ্চিত হতে হবে।

জরায়ুতে টিউমার থাকা অবস্থায় গর্ভধারণ হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তা কোনো অসুবিধা করে না। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে টিউমারের কারণে মা ও সন্তানের বিভিন্ন জটিলতা হতে পারে, যেমন—      

টিউমারটি সাব-মিউকাস হলে গর্ভপাতের আশঙ্কা বেশি থাকে। কারণ, জরায়ুর ভেতরে থাকে বলে সাব-মিউকাস টিউমার ভ্রূণ এবং প্লাসেন্টার স্থাপনকে বাধাগ্রস্ত করে।

প্রেগন্যান্সির কারণে এই টিউমারেরও কিছু পরিবর্তন হয়, যা জটিলতা তৈরি করে। যেমন, জরায়ু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে টিউমারের আকার ও আকৃতি পরিবর্তন হতে পারে। অনেক সময় টিউমারের মধ্যে রক্তক্ষরণ হয়ে অথবা পানি জমা হয়ে পেটে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি করে।

সিজারের সময় টিউমারটি ফেলা যাবে কি না, এটি নির্ভর করে টিউমারে কোনো জটিলতা আছে কি না, কোথায় অবস্থিত এবং এর সাইজের ওপর। তবে এ সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের আশঙ্কা থাকে। সন্তান প্রসবের পর অনেক টিউমার আকারে ছোট হয়ে যায়।

লেখক: কনসালট্যান্ট (গাইনি), বিআরবি হসপিটালস লি.


No comments

Theme images by compassandcamera. Powered by Blogger.